পুরোনো ভবনটি একেবারে নড়বড়ে অবস্থায় পৌঁছেছে। এ অবস্থায় চলছে রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের কার্যক্রম। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রোগী ও স্বজনদের মধ্যে যেমন ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তেমনি চিকিৎসকরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জরাজীর্ণ ভবনটির ছাদে ফাটল ধরেছে, দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। রড বের হয়ে রয়েছে অনেক জায়গায়। ভবনের একাধিক কক্ষ ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার পরও রোগীদেরকে সেগুলোতেই সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, নতুন ভবন তৈরি হলেও প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমোদনের অভাবে সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয় এবং ২০২৩ সালের জুন মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু প্রশাসনিক অনুমোদন না পাওয়ায় ভবনটি এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, নতুন হাসপাতাল তৈরি করে রেখে পুরোনো ভাঙা ভবনে চিকিৎসা চালানো কোনো মানবিক কাজ হতে পারে না। তাদের দাবি, অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙে পূর্ণ সংস্কার এবং নতুন হাসপাতাল ভবন চালু করে নিরাপদ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হোক।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রফিক মিয়া বলেন, ‘এখানে এসে মনে হলো হাসপাতাল নয়, যেন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। সামান্য ভ‚মিকম্প হলেই এই ভবন আর থাকবে না।’
আরেক রোগী হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পাশেই তো বিশাল নতুন ভবন তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেটা খালি পড়ে আছে। সেখানে আমাদের নিয়ে গেলে কী সমস্যা?’
এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপ করলে তিনি জানান, ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে এবং পরিত্যক্ত তালিকায়ও আছে। এটি পূনঃনির্মাণের জন্য কাজ চলমান আছে। আর নতুন ভবনের প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও জনবল লাগবে। প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছি। জনবলের চাহিদাও দিয়েছি। এসব মন্ত্রণালয়ে আছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনের আগে অথবা পরে অনুমোদন হয়ে যাবে।
