মেলেনি কোথাও তার সন্ধান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর(বুধবার)সকাল ১০টার দিকে নগদ টাকা, কিছু স্বর্ণালংকার ও কাপড়-চোপড় নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে হবিগঞ্জের উদ্দেশে বের হয় লাবনী আক্তার। পরদিন(৪ সেপ্টেম্বর) পরিবারের পক্ষ থেকে বানিয়াচং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
এদিকে ডায়েরি করার পূর্বে নিখোঁজের দিন রাতে আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে লাবনীর বড় ভাই ছুটন মিয়া ছোট বোনের মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে সে রিসিভ করে জানায়, যেখানে গিয়েছে সেই জায়গার গেইট মালিক তালা দিয়ে দিয়েছেন।
যার কারণে সে বের হতে পারছেনা। তবে সঠিক স্থানের নাম বলতে পারেনি।
শুধু হবিগঞ্জ শহরের"রাজনগর" শব্দটুকু বোঝা গিয়েছিলো বলে পরিবারের দাবি। এসময় মোবাইলের লাইনটি কেটে গেলে সাথে সাথে পুনঃরায় ফোন করা হলে মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন লাবনীর মা ও ভাইয়েরা হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পাননি।
নিখোঁজ কলেজ ছাত্রী লাবনী আক্তার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চতুরঙ্গ রায়ের পাড়া মহল্লার মৃত শাহানুর মিয়ার কনিষ্ঠ কন্যা।
পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন লাবনীর খাতা-বই তল্লাশি করে মা’র উদ্দেশে লেখা ৪ পৃষ্ঠার একটি (চিঠি) চিরকুট পান তারা।
তাতে লাবনী তার মাকে উল্লেখ করে, সে ছোট্ট বেলা থেকে ঐ কম্পিউটার শিখার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু পরিবারকে বল্লে করতে দিবেননা। তাই এই ভয়ে আর সে কোনদিন বলে নাই।এজন্য হবিগঞ্জে সরকারি খরচে কম্পিউটার শিখতে দরখাস্ত দিয়েছিলো।
সে সিলেক্টেড হয়েছে এজন্য কাউকে ভয়ে কোন কিছু না বলে হবিগঞ্জ শহরে সরকারি খরচে ৪ মাসের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে।
তবে সে কারও হাত ধরে পালায়নি এবং তারা যেনো তাকে কোন খোঁজ না করে এই কথা গুলো বারবার লিখেছে।
তাকে যেন মা বিশ্বাস করেন, কোন ছেলের সাথে যে পালিয়ে যায়নি তাদের লাবনী।
এমনকি চিঠিতে আরও উল্লেখ করে গেছে, ৪ মাস পর সে নিজে ঐ বাড়ি ফিরবে।
এছাড়াও লাবনী খাতায় দু'টি মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়।
এই দু'টি মোবাইল নাম্বারের মধ্যে একটা নাম্বারের লোকজনের কাছে রয়েছে এমনটা সন্দিহান প্রকাশ করছেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের দাবি, লাবনী বাড়ি থেকে সকালে যাওয়ার সময় মায়ের লুকিয়ে রাখা ৭ হাজার ও বোনের সঞ্চিত ২ হাজার টাকাসহ মোট ৯ হাজার টাকা এবং কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
তাদের মেয়েটাকে কেউ কোন প্রলোভন দিয়ে আটকে রেখেছে সম্ভবত তাদের মেয়েটা কোন বিপদের মধ্যে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার সেকেন্ড অফিসার আমিনুল ইসলাম পরিবারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) থানায় একটি জিডি নথিভুক্ত করেছেন।
এদিকে পরিবারের অভিযোগ,থানায় গতকাল থেকে যথেষ্ট পরিমাণ তথ্য দিয়ে আসলেও তাদের কাছ থেকে মেয়েটাকে উদ্ধার করতে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখতে পাননি বলেও জানান তারা।
এ ব্যাপারে থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মিজানুর রহমানকে বিষয়টি অবগত করে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমি থানায় আসা মাত্র ঐ ঘটনাটি শুনেছি।
এ বিষয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে লাবনীকে উদ্ধারের কার্যক্রম চালাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এবং শীঘ্রই লাবনীকে উদ্ধার করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাদের ভিন্ন মতামত প্রকাশ করছেন।
অনেকেই বলেন পরিবারের কাছে যেহেতু মেয়েটি নিজেই চিঠি লিখে রেখে গেছে তাহলে এখানে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টাকে রহস্যজনক করে তুলেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।