ঢাকা

আজমিরীগঞ্জে প্রায় পৌণে এককোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণে, পোস্টঅফিস সহ বাজারের অধিকাংশ দোকানে পানি

কুশিয়ারা বার্তা

প্রকাশিতঃ

Shares

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে প্রায় পৌণে এককোটি টাকা ব্যয়ে টানবাজারের রাস্তা নির্মাণে কারও পৌষমাস আবার কারও সর্বনাশে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ আগের রাস্তাটির উপর কোথায়ও ছয় ইঞ্চি আবার কোথায়ও এরচেয়ে কম উঁচু করে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। এতে করে দুই-তিন সিঁড়ি উঁচু দোকানগুলো ভূগান্তির শিকার হতে দেখা যায়নি। অপরদিকে ভূগান্তির শিকার হয়েছে এক সিঁড়ি বা কম উঁচু দোকান সমূহ। ঢালাইয়ের কাজ শেষে এক পর্যায়ে বৃষ্টি আসার পর দেখা যায়, বৃষ্টির পানি নিচু ব্যবসা প্রতিষ্টান সমূহের ভিতরে প্রবেশ করে অনেকেরই বিভিন্ন মূল্যবান জিনিষপত্র পানিতে বিনষ্ট হয়ে গেছে। পর এসব ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের সামনে তিন-পাঁচ ইঞ্চি উঁচু করে ঢালাই দিতে হয়েছে। এমনি করে গত শুক্রবার বৃষ্টি হলে, থানা রোডের পুষ্পিতা মেডিক্যাল হলের ভিতরে ও হোটেল নিরিবিলি সামনের কক্ষে পানি প্রবেশ করে। ফার্মেসির মালিক, সজয় রায় জানান, বৃষ্টির পানি ভিতরে প্রবেশ করে অষুধের বক্স সহ মূল্যবান কাগজপত্রাদি ভিজে গেছে। এদিকে উপজেলা পোস্টমাস্টার জানান, পোস্টঅফিসের গেইটের সামনের অংশ নিচু করে আবার পানি প্রবাহের অংশটি উঁচু করে ঢালাই করা হয়েছে। এতে করে মাছবাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে বাজারের একাংশের রাস্তার পানি সহ আবর্জনা অতি সহজেই পোস্টঅফিসের ভিতরে প্রবেশ করবে। বিষয়টি পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার সহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জানালেও তারা আমলে নেয়নি। পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নিবিড় রঞ্জন তালুকদারের নির্দেশে পোস্টঅফিসের গেইটের দু'টি পিলারের মাঝামাঝি অংশ ঢালাইয়ের দ্বারা করে উঁচু করে দেয়া হয়েছে। তবে এখন পোস্টঅফিসের ভিতরে পানি প্রবেশ না করলেও গেইটের সামনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, টানবাজারের রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে। ঢালাইকৃত সম্পূর্ণ রাস্তাটি অসমতল ও অমসৃণ, সংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে রাস্তার কোথায়ও উঁচু আর নীচু বা ঢালো করে দিয়েছে। তারা আরও বলেন, পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার সহ অনেক কর্মচারি মনে করেন, তাদের মতো বুঝদার এ অঞ্চলে আর কেউ নেই। এ ছাড়া তাদের এহেন মনগড়া কাজের কোন জবাবদিহিতাও নেই।

প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আজমিরীগঞ্জ টানবাজার সহ লালমিয়া বাজারের একাংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সরকার। উক্ত কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৭৭ লক্ষ টাকা। ওই কাজে অর্থায়নে রয়েছে বিশ্বব্যাংক। কাজের দ্বায়িত্ব পায় কিশোরগঞ্জের লিলি এন্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান। ওই কাজের তদারকি ও বাস্তবায়নের দ্বায়িত্ব পায় আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা। নিয়মানুযায়ী দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্টান কাজ করার কথা থাকলেও, কাজ করানো হচ্ছে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের মাধ্যমে। কয়েকদিন পূর্বে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। কাজের শুরুতে নামমাত্র চিকপাথর ব্যবহার করা হলেও সংস্কারের ৯৫ ভাগ অংশে তা আর ব্যবহার করা হয়নি। এ ছাড়া নিম্নমানের রড, মাটি মিশ্রিত মরাপাথর, মাটি মিশ্রিত বালু ও নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। ঢালাই ৬ ইঞ্চি দেয়ার কথা থাকলেও রাস্তার অনেক জায়গায় এর চেয়ে কম দেয়া হচ্ছে। ঢালাইয়ের সংমিশ্রণে বালু ও পাথরের ভাগ বেশী ও সিমেন্টের ভাগ কম দেয়া হচ্ছে। রড বাঁধার গেপ বা ফাঁক নির্ধারণের চেয়ে বেশী দেয়া হচ্ছে। ঢালাইয়ের কাজ অমসৃণ ও এবরো তেবরো ভাবে করা হচ্ছে। কোথায়ও উঁচু আবার কোথাও নীচু। এ ছাড়াও  শুরুতে কাজের বিবরণী সম্বলিত সাইনবোর্ড টানানো বাধ্যতামূলক, কিন্তু কাজ শেষের পথে অদ্যাবধি তা টানানো হয়নি। এলাকার লোকজনদের অন্ধকারে রেখে তারা তাদের ব্যাক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।

Tags: