স্থানীয় সূত্র জানায়, হাওরের বিভিন্ন অংশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে হাউসবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল বেড়েছে। পর্যটকদের আনন্দ-উল্লাস, উচ্চস্বরে গান, ওয়াচ টাওয়ার থেকে পানিতে লাফ—সবকিছু মিলিয়ে হিজল-করচ গাছগুলো মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। কেউ গাছে উঠে সেলফি তুলছে, কেউবা গাছের ডাল ভেঙে নিচ্ছে গানের তালে তালে।
হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জেলা প্রশাসন ২১ জুন ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করে, যাতে পরিষ্কার বলা হয় বনজ সম্পদ ধ্বংস করা যাবে না। নির্দেশনায় গাছকাটা, ডাল ভাঙা, বা বনজ উপাদান সংগ্রহ নিষিদ্ধ করা হলেও পর্যটকদের আচরণে তাতে গুরুত্ব নেই। এমনকি নির্দেশনার ৫ নম্বর পয়েন্টে স্পষ্টভাবে বলা হলেও হিজল-করচ গাছের ওপর উঠে সেলফি তোলা কিংবা আনন্দ উৎসবে গাছ ধ্বংস করা এখন নিত্যদিনের ঘটনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওরের ইকোসিস্টেম রক্ষা করতে হলে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হিজল-করচ শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, বর্ষার সময় এসব গাছের নিচে ছোট মাছ, জলজ প্রাণী ও পাখির নিরাপদ আশ্রয় থাকে। গাছগুলোর ক্ষতি হলে হাওরের জীববৈচিত্র্য একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হলেও পর্যটকদের অসচেতন আচরণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, হাওরের সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে পর্যটনকে শৃঙ্খলিত করা ছাড়া উপায় নেই। তা না হলে একদিন হয়তো টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্যই থাকবে না, থাকবে শুধু দুঃখগাথা।
