মোজাহিদ মিয়া, আজমিরীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :
আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন,
কাকাইলছেও ও জলসুখায় কোন রকম অনুমতি ছাড়াই ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে
অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন। এতে করে পরিবেশ বিপর্যয় সহ লাখ লাখ টাকার
রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জানা যায়,
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার
বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ কখনও প্রকাশ্যে আবার কখনও গোপনে কোন রকম
অনুমিত ছাড়াই অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে চলছে বালু উত্তোলন। ওই বালু
উত্তোলনে এলাকার একাধিক বালুখেকোচক্র জড়িত বলে জানা গেছে। একাধিকবার
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর
রহমান খাঁন এবং সাবেক সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা
করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দন্ডিত করেন। এরপরও থেমে নেই
বালুখেকোচক্রের সদস্যরা।
এরই ধারাবাহিকতায়, আজমিরীগঞ্জ ১ নং সদর
ইউনিয়নের বিরাট ভাটিপড়া অদূরে শরীফউদ্দিন সড়ক ও গুচ্ছগ্রাম এর মাঝামাঝি
একটি সরকারি জলাশয় থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়
এলাকার এক ইউ,পি সদস্য। এ প্রেক্ষিতে গত শনিবার ওই জলাশয় ড্রেজার মেশিন
স্হাপন করে এ থেকে পাইপ সংযোগ দিতে দেখা যায়। একই দিন দিবাগত রাত থেকে বালু
উত্তোলন করার কথা রয়েছে। স্হানীয়রা জানায়, বালু উত্তোলনের মাধ্যমে একটি
রাস্তা নির্মাণ করার কথা রয়েছে। রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে কাবিখা ( কাজের
বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী) কর্তৃক ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। বালু
উত্তোলন করা হলে, বানিয়াচং - আজমিরীগঞ্জ ভায়া জলসুখা অর্থাৎ শরীফউদ্দিন
সড়কের জলাশয় সংলগ্ন ব্রীজ ও গুচ্ছগ্রামের একাংশ এ ছাড়া একটি বৈদ্যুতিক খুটি
ধ্বসে যাওয়ার আশংখা রয়েছে।
এদিকে,
আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেওয়ের বশিরা
নদীর তীরে অবস্হিত রসুলপুর গ্রামে ৮ থেকে ১০ দিন যাবৎ একটি বালুখেকোচক্র
ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে কোন রকম অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে সংলগ্ন বশিরা নদী
থেকে বালু উত্তোলন করে চলছে। ওই চক্রটি বালু উত্তোলন করে প্রতি ঘনফুট বালু
১০ থেকে ১২ টাকা করে এলাকার লোকজনের নিকট বিক্রি করে আসছে। এ ছাড়াও ভিটা
নির্মাণ করছে বলে স্হানীয়রা জানায়। জড়িত বালুখেকোচক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায়,
ভয়ে কেউ মূখ খূলছে না। বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে, নদী ভাঙ্গনের আশংখা
রয়েছে।
অপরদিকে,
আজমিরীগঞ্জের জলসুখার নোয়গড় গ্রাম এলাকায়
পার্শ্ববর্তী জলাশয় থেকে বিগত প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ কোন রকম অনুমতি ছাড়াই
অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে ভিটা নির্মাণ করছে একটি
বালুখেকোচক্র। ওই চক্রটি ভিটা নির্মাণের পাশাপাশি প্রতি ঘনফুট বালু ১০
থেকে ১২ টাকা করে বিক্রি করছে। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এলাকার কেউ মূখ
খূলতে নারাজ। ওই জলাশয় থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে পরিবেশ বিপর্যয়ের
আশংখা রয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, সরকারি জায়গা বা জলাশয় থেকে বালু উত্তোলন
করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতি ঘনফুট বালু হিসেবে
রয়েলিটি জমা
দিতে হয়। কিন্তু কোন রকম অনুমতি ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায়, লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।